December 23, 2024, 1:28 am
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
কুষ্টিয়ায় ৭দিনের কঠোর লকডাউনের ৩য় দিন চলছে। পিসিআর ল্যাব ও জেলা সিভিল সার্জনের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় ৩৫৪জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন করে ১২২জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। সনাক্তের হার ৪০ শতাংশ এর উপরে। শেষ ২৪ ঘন্টায় জেলায় আরো ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলা ভিত্তিক রিপোর্টে সদরে ৬৮ জন,কুমারখালি ৯ জন,দৌলতপুরে ১১ জন, ভেড়ামারায় ৯ জন,মিরপুর উপজেলায় ১৫ জন, খোকসায় ১০ জন পজিটিভ এসেছে।
এদিকে, লকডাউন বাস্তবায়ন করতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন। শহরে ঢোকার প্রতিটি প্রবেশ মুখে বাঁশ বেধে ব্যরিকেড দেয়া হয়েছে। জরুরী সেবা ছাড়া কাউকেই শহরে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। এছাড়াও লকডাউন কার্যকর করতে সার্বক্ষনিক মাঠে কাজ করছে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত।
সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘কঠোর লকডাউনের দুই দিনে তেমন কোনো ভালো ফল আসবে না। এখনকার লকডাউনের ভালো ফল এক সপ্তাহ পর আসে।
প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে বর্তমান সময়ে সর্বোচ্চ শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড হচ্ছে। সম্প্রতি কুষ্টিয়া পৌরসভায় সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। কিন্তু এখানে কঠোর লকডাউন চলছে। এরপরও কেন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, তা নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন। করোনার সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে তাতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া বেশ কঠিন হবে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা জানান, করোনার শুরু থেকেই কুষ্টিয়া জেলায় শনাক্তের হার কখনো ২০ শতাংশের ওপরে যায়নি। কিন্তু এখন শনাক্তের হার ৪০ শতাংশের ওপরে উঠে গেছে।
এদিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভিড় লেগেই আছে। বেডের তুলনায় সেখানে প্রায় দ্বিগুণ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। বেড না থাকায় রোগীদের বারান্দায় রাখতে হচ্ছে। রোগীর ভিড় বেড়ে যাওয়ায় ওয়ার্ডের বারান্দা, স্বাস্থ্যকর্মীদের বসার জায়গাটুকুও রোগীর শয্যায় রূপান্তরিত হয়েছে। এমন অবস্থায় জেনারেল হাসপাতালের ১০ নং সার্জিক্যাল ওয়ার্ড ও মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ডায়াবেটিক হাসপাতালের একটি অংশকে করোনা ওয়ার্ড হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবদুল মোমেন বলেন, হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে ১০০ শয্যার বিপরীতে এখন রোগীর সংখ্যা ১২০ জন। ওয়ার্ডে নতুন করে আর কোনো রোগী ভর্তির সুযোগ নেই। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতাল থেকে ৩০ জন সাধারণ রোগীকে পাশের মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ডায়াবেটিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, রোগী বাড়ছে। পরিস্থিতি ভালো না। উপজেলা পর্যায়, এমনকি গ্রাম থেকে রোগী বেশি আসছেন। ২৫০ শয্যা হাসপাতালকে খুবই দ্রুত কোভিড ডেডিকেটেড করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আর অক্সিজেন যা আছে এবং যে হারে রোগী ভর্তি হচ্ছেন, তাতে সংকটে পড়তে হতে পারে। কারণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো থেকে যেসব রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে আনা হচ্ছে, সেসব রোগীর প্রায় সবারই অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে।
উল্লেখ্য, অস্বাভাবিক হারে করোনা সংক্রমন বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্তবর্তী জেলা কুষ্টিয়ায় ২০জুন মধ্যেরাত থেকে ২৭জুন মধ্যেরাত পর্যন্ত ৭দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষনা করে গণবিজ্ঞপ্তি দেয় জেলা প্রশাসন।
Leave a Reply